পেকুয়ায় ধান ক্ষেত থেকে এক সিএনজি চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ২৭মার্চ রবিবার সকাল ১০টার দিকে পেকুয়া থানা পুলিশ উপজেলার টইটং ইউনিয়নের টেইট্যাখালীর বিলের মাঝ খানে ফসলি জমির ধান ক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে আটক করেছে। নিহত সিএনজি চালকের নাম মো.হোসাইন (১৮)। তিনি ওই ইউনিয়নের গর্জনীয়াপাড়া এলাকার ওমান প্রবাসি আব্বাস উদ্দিনের ছেলে।
আটক ব্যক্তির নাম আব্দু রহমান (২২)। সে টইটং বাজারপাড়া এলাকার হাজ্বী নজির আহমদের ছেলে বলে জানা গেছে। সুরতহাল রির্পোট শেষে পুলিশ ওইদিন দুপুরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। ওই হত্যা কান্ডের ঘটনায় টইটং এলাকায় জনজীবন স্তব্ধ হয়েছে। অজ্ঞাত খুনিরা ওই কিশোরকে হাত-পা রশি দিয়ে বেধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার পেছন দিক থেকে জবাই করে নিষ্টুরভাবে খুন করে।
এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত নিষ্টুর ওই হত্যা কান্ডের ক্লু উদঘাটন হয়নি। পুলিশ আটককৃত ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এদিকে সিএনজি চালক হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শ্রমিক ইউনিয়নসহ সর্বস্তরের মানুষ। সিএনজি চালক হত্যাকান্ডের এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পেকুয়া-বরইতলি-মগনামা সিএনজি-আটোরিক্সা শ্রমিকরা সড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সভাপতি নাছির উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক মো.বারেকের নেতৃত্বে কয়েকশতাধিক শ্রমিক ওইদিন দুপুরে টইটংয়ের হাজ্বিবাজার থেকে টইটং বাজার পর্যন্ত এবিসি সড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে গতকাল রবিবার সকালে টইটং ইউনিয়নের কাছারীমুড়ার দক্ষিন পাশ্বে ও জালিয়ারচাংয়ের উত্তর অংশের নির্জন টেইট্যাখালী বিলের ধান ক্ষেতে ওই কিশোরের লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। হাত-পা রশি দিয়ে বেধে গলাকাটা অবস্থায় পড়ে থাকা ওই লাশটি মো.হোসাইন বলে স্থানীয়রা সনাক্ত করে। পরে বিষয়টি তারা পুলিশকে অবহিত করেছেন। এদিকে ওইদিন নিষ্টুর হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পেকুয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া, এসআই বিমল কান্তি নাথ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে হত্যা কান্ড নিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে কোন ধরনের মতামত ও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন আটককৃত যুবক আব্দু রহমান একজন কৃষক। ওইদিন টইটংবাজার থেকে গুদিকাটা এলাকার মাহমদ মাঝিসহ কয়েকজন ব্যক্তি তাকে পুলিশে তুলে দেয়। টইটং এলাকার লোকজন জানিয়েছেন গত কয়েকমাস আগে আব্দু রহমানের সাথে মাহমদ মাঝির এক ভাইয়ের সাথে মোবাইল চুরির বিষয় নিয়ে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে দু’পক্ষে মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এর জের ধরে এদিন মাহমদ মাঝি কৌশলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
স্থানীয়রা জানায় মো.হোসাইন হিরাবুনিয়া এলাকার হাসানের মালিকানাধিন আব্দুল গনি এক্সপ্রেস নামে সিএনজি ভাড়ায় নিয়ে চালাত। গত কয়েকদিন ধরে টইটংয়ের এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচারনার জন্য ওই সিএনজি ব্যবহৃত হয়েছে। ওইদিন রাতে মো.হোসাইন বাড়িতে যাননি। মাঝে মধ্যে তিনি হাসানের বাড়িতে রাত্রিযাপন করতেন। আটককৃত আব্দু রহমান এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচারনায় মাইকিং করত।
আব্দু রহমানের বড় ভাই আতাউল্লাহ জানায় ঘটনারদিন রাতে আব্দু রহমান বনকানন এলাকায় এক বিয়ে অনুষ্টানে যান। ডেকোরেশনের যাবতীয় দায়িত্ব তার উপর ছিল। সে সারারাত বিয়ে বাড়িতে অবস্থান করে। খুন হওয়ার খবর পেলে সকালে তার মা বিয়ে বাড়ি থেকে তাকে নিজ বাড়িতে ডেকে আনে। ভাত খেয়ে টইটং বাজারে গেলে মাহমদ মাঝিসহ কয়েকজন তাকে পুলিশে তুলে দেয়। টইটং ইউপির চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন জানায় ছেলেটি শান্ত স্বভাবের। তার প্রতি কারো শত্রুতা থাকার কথা নয়। তাকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে।
###############
পেকুয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানিয়েছেন
পেকুয়ায় ভোরের কাগজ প্রতিনিধির উপর সন্ত্রাসী হামলা
বার্তা পরিবেশক ::
পেকুয়ায় জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজ ও রূপসীগ্রাম পত্রিকার প্রতিনিধি শাখাওয়াত হোছাইন এর উপর হামলা চালিয়েছে একদল দূবৃর্ত্তরা। এসময় পেকুয়ার কবির আহমদ চৌধুরীর বাজারে ওই সংবাদকর্মীকে স্বশস্ত্র দূবৃর্ত্তরা প্রাণনাশ চেষ্টার জন্য অপহরন করার চেষ্টা করে। এসময় টানা হেছড়ার একপর্যায়ে তার আত্মচিৎকারে জনাকীর্ণ বাজারের ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা দ্রুত ওই স্থানে এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে দূবৃর্ত্তরা দ্রুত সটকে পড়েন। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উত্তেজনা প্রশমিত করতে পুলিশ কয়েক দফা রাতে ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাটি ঘটেছে, গত ২৬ মার্চ শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরীর বাজারে সাথী ফ্যাশন নামের দোকানের সামনে। ওই ঘটনার জের ধরে পেকুয়াবাজারে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওই কলম সৈনিককে স্তব্ধ করতে একদল দূবৃর্ত্তরা তার উপর গত ৬মাসে ব্যবধানে দু’দফা প্রাণনাশ ও হামলার ঘটনা সংঘটিত করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সংবাদকর্মী শাখাওয়াত হোছাইন সুজন কর্মস্থল চৌমুহনী থেকে সন্ধ্যায় পেকুয়াবাজারে অবস্থান করে। এসময় সাথী ফ্যাশন স্টোরের সামনে দাড়িয়ে তিনি মুটোফোনে কথা বলছিলেন। পুর্ব থেকে উৎপেতে থাকা সদর ইউনিয়নের বকসু চৌকিদারপাড়ার মৃত.ফজল করিমের ছেলে দিদারুল করিমের নেতৃত্বে ৩/৪জন দূবৃর্ত্তরা তাকে প্রাণনাশের জন্য অপহরন করার চেষ্টা চালায়। ধস্তাধস্তির এক পযার্য়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা ও ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসে ওই সংবাদকর্মীকে উদ্ধার করেন।
এব্যাপারে সংবাদকর্মী শাখাওয়াত হোছাইন সুজন বলেন, বস্তুনিস্ট সংবাদ প্রকাশে ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের ইন্ধনে তার শ্যালক দিদার আমার উপর হামলা করেছে। এর আগেও একবার তারা আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায়।
পাঠকের মতামত: